নচিকেতা
- কমলেশ পাল
===========
আমাকে দিয়েছ নির্বাসন৷
দিয়েছ মৃত্যুর হাতে -
তবে কেন মাঠেঘাটে রাস্তায় বাজারে
যারই সঙ্গে দেখা হয় তারই কাছে বল :
নচিকেতা নষ্ট হয়ে গেল৷
তবে কেন দু:খ কর লোকসভা বিধানসভায় :
সংসারে আমাকে রেখে নচিকেতা দূরে সরে যায়৷
মদ খায়, হল্লা করে, পেটো ছুঁড়ে মারে,
আজকাল মান্যজনে কেয়ার করে না৷
দেশের বিপদ সামনে -সীমান্তে ও ঘরে
অথচ সে উগ্রপন্থী, ছিন্ন হবে, আমাকে শাসায়৷
আমাকে সংসরে রেখে নচিকেতা দূরে সরে যায়৷
কাকে বল?
কার কথা বল?
পঁয়ত্রিশ বছর গেল, চেনাশোনা হয়নি এখনও?
রিগি ংমাষ্টার থেকে স্ট্রাইক ভাঙা ঠ্যাঙারে মস্তান
ভারতবর্ষের যেখানে নরক;
যেখানেই লোভ, হিংসা, সঞ্চয়, ক্ষমতা রাহাজানি
অন্ধকারে দেখাশোনা হয়েছে সেখানে৷
আলোহীন আগুনের মাঝখানে দেখাশোনা হয়েছে সেখানে৷
দিয়েছ মৃত্যুর হাতে
মদ ও বমির মধ্যে উল্টে আছি উত্তর পুরুষ৷
বৃদ্ধ, পঙ্গু, রুগ্ন গাভীগুলো নিয়ে যাচ্ছে দু:স্থ যাজকেরা -
পঞ্চবর্ষী যোজনার উত্তেজনা শান্ত হয়ে এলে
মাঠের মুনিষ থেকে কলের শ্রমিক
যজ্ঞ শেষে উদ্বৃত্ত কেবল৷
তদের চোখের সামনে অস্থিময় রাত্রি ছাড়া আর কিছু নেই৷
তাদের দৃষ্টির পথে পায়ে পায়ে আটকে যাওয়া দিন৷
আমি উদাসীন, বলি না তোমাকে আজ -
"কেন এই মিথ্যা প্রবঞ্চনা?"
এখন জড়ানো জিভে স্পষ্ট কোনও উচ্চারণ সহজে আসেনা৷
মহারাষ্টে, আসামে, পাঞ্জাবে
নিজেকে হনন ছাড়া অন্য কোনও আন্দোলন নেই৷
দুধালো গাভীর দিকে, অর্থ ক্ষমতার দিকে নি:স্বরা দেখে না৷
তবু তুমি দু:খ কর, নচিকেতা ছিন্ন হতে চায়!
নচিকেতা ছিন্ন হতে চায়?
না কি এ তোমার ভয়, নচিকেতা সম্পূর্ণ মরেনি৷
এখনও পীড়িত লোক কোলে তুলে নচিকেতা যায় হাসপাতালে৷
এখনও গাছের ডালে পাখি দেখলে বলে ওঠে, বা:৷
নচিকেতা পাল্টে যাচ্ছে ভিতরে ভিতরে৷
ছিন্ন নয়, যেন তার সংঘবদ্ধ ফিরে আসা আছে৷
মৃত্যুর ভিতর থেকে জীবনের কাছে ফেরা আছে৷
ফেরা আছে ৷৷৷
ফেরা আছে ৷৷৷
আছে৷
No comments:
Post a Comment